কিশোরগঞ্জ-১ আসনে (সদর-হোসেনপুর) স্বতন্ত্র প্রার্থী ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (০৩ ডিসেম্বর) সকালে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরিত তালিকায় গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে। কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই হয় রোববার। এদিন কিশোরগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের সমর্থনকারীর মধ্যে মৃত ব্যক্তির পক্ষে তাঁর ছেলে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন। যাচাই-বাছাই কমিটি এটি আমলে নিয়ে মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন।
এ বিষয়ে সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, অদৃশ্য কারণে আমার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। আমি আপিল করবো।
এছাড়া এ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস দল থেকে দুজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে দল থেকে মনোনয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় আবুল কাশেমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ সাদীর সমর্থনকারীর মধ্যে ৬ জনের তথ্য ভুল থাকায় মনোনয়নপত্রটিও বাতিল হয়।
এদিকে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা এবং সাবেক এমপি মেজর (অবঃ) আখতারুজ্জামানের হলনামায় মামলার তথ্য গোপন ও ঋণখেলাপী থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করেন যাচাই-বাছাই কমিটি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সবাই বলছে আমি আওয়ামী লীগের দালাল। আমি যে হালুয়ারুটি নিয়ে সরকারের দালালি করতে আসেনি এটা আজ প্রমাণিত হয়েছে।
এছাড়া হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করায় গণতন্ত্রী পার্টির প্রার্থী আশরাফ আলী এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আহসান উল্লাহর প্রস্তাবকারী ও সমর্থণকারী সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আপিলের সুযোগ রয়েছে। আমি আপিল করবো।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের সর্মথনকারীর মধ্যে ৯ জন সর্মথন না করায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ বিষয়ে শামীম আহমেদ বলেন, একটা পক্ষ ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার পক্ষে স্বাক্ষর করা ৯ জনকে আমার বিপক্ষে বলিয়েছেন। আমি আপিল করবো। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী রুবেল মিয়ার সর্মথনকারীর মধ্যে ১ জনের স্বাক্ষর না মিলায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূইয়ার সমর্থনকারীর ৬ জনের স্বাক্ষর আছে কিন্তু সমর্থন করেন নাই বিধায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জের ৬টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনের (১,২ও ৩) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়। এই ৩টি আসনে মোট ৩০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও ২০ জনের মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে। বিভিন্ন কারণে ১০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তাদের আপিলের সুযোগ রয়েছে।
Comments
comments