স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা লগ্নেই জনমানুষের ভাবনা ছিল একটি, সুশৃঙ্খলা, সর্বাঙ্গীন উন্নত জাতি। বহু পরিকল্পনাও হয়েছে স্বাধীন রাষ্ট্রকে উন্নতির সোপানে অধিষ্ঠিত করতে। কিন্তু গোড়াতেই গলদ শুরু হল। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, জননিরাপত্তা, সেনাবাহিনী, প্রশাসনিক ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হয়েছে বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতার এত বছর হয়ে গেলো ক্ষুধা ও ভীতি থেকে আমরা কি মুক্ত হতে পেরেছি? অবশ্যই না।ক্ষুধা ও ভীতির বেড়াজালে আমরা আজও জড়িয়ে আছি। এই স্বাধীনতা নিয়ে রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাজারো ভাবনা। সেই সকল ভাবনার চুম্বক অংশ তুলে ধরছেন- আবু জাফর
ফরিদ মুস্তাকিম, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়:
স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছরে এসে মনে হয়, আমরা এখনো ‘আধুনিকতার বিশ্রামাগার’ এ বন্দি। আমরা আধুনিক জীবনব্যবস্থার প্রতিটি উপকরণের মাঝে বসবাস করেও নিজেদের সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক বৈষম্য নিশ্চিত করতে পারিনি,শুধুমাত্র নিজেদের সচেতনতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতা কারণে। আগামীর বাংলাদেশ হবে বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতার বাংলাদেশ, একজন তরুণ হিসাবে এই প্রত্যাশা থাকবে।
মাহফুজ কিশোর, বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়:
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আঙিনায় দাঁড়িয়ে প্রিয় স্বদেশ- একজন বাংলাদেশীর জন্য এর চাইতে গৌরবের বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। স্বাধীনতার এই ঊনপঞ্চাশ বছরে যাকিছু প্রাপ্তি, তার বাইরে জাতীর সামনে আসছে একের পর এক চ্যালেঞ্জ। এই মুহূর্তে নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আশা রাখি, এ থেকে উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের সঙ্কট কাটিয়ে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মেলাবে ‘স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ’।
হানিফ ওয়াহিদ, লোক প্রশাসন বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়:
আমাদের স্বাধীনতা এনে দেয়ার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনৈতিক মুক্তি দিয়ে গেছেন। জাতির জনকের তনয়া দেশরত্ন শেখ হাছিনার হাত ধরে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।এই এগিয়ে যাওয়ার প্রধান শক্তি হচ্ছে তরুণ সমাজ।তারুণ্য এবং বঙ্গবন্ধু একে অপরের পরিপূরক। স্বাধীনতার এই মাসে ‘সচেতনতাই’ হোক আমাদের দীপ্ত শপথ।আমাদের সচেতনতাই পারে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস, ধর্ষণের মূল উচ্ছেদ করতে। তবেই গড়ে উঠবে আদর্শ, মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক স্বপ্নের সোনার বাংলা। তরুণদের মধ্যে সচেতনতা উজ্জীবিত করার মাধ্যমে তাদের দীপ্ত মেধা এবং সতেজ জ্ঞানের গতি এই সবুজ শ্যামল বাংলাকে প্রকৃত সোনার বাংলায় রুপান্তরিত করতে পারে।
তানভীর আহমেদ রাসেল, ফার্মেসী বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়:
বাঙ্গালী বিশ্বের বুকে অপারেজয় এক বিজয়ী জাতি। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে, অনেক মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে, পাক হানাদার বাহিনীর অনেক নির্যাতন নিপীড়নে পরম সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়ে বিজয়ের মুকুট পরিধান করে বিশ্বকে অন্য এক বাংলাদেশের জানান দিয়েছে এই জাতি। অথচ সেই বাঙ্গালী জাতি গৌরবময় ইতিহাস ও আদর্শকে ভুলতে বসেছে। আমাদের গুনে ধরা নৈতিকতা যার নেপথ্যে অন্যতম কারণ। একটি জাতির সর্বক্ষেত্রে যদি নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটে তবে উন্নয়নের পথে চিতার গতি তো দূরের কথা, কচ্ছপের গতি পাওয়াও কঠিন।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার প্রকৃত রুপ দিয়ে বিশ্বের বুকে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে প্রত্যেকের নিজেদের জায়গা থেকে নৈতিকতা ও মনুষ্যত্বকে লালন করতে পারলেই অর্জিত হবে সোনার বাংলার প্রকৃত অর্থ।
আবু জাফর, শিক্ষার্থী (বাংলা বিভাগ) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
Comments
comments