আমায় প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে কোথাও না কোথাও বন্যপশুর মতো হিংস্র নখ দিয়ে ছিঁড়েফেঁড়ে খাচ্ছে সভ্যতা— রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত করছে আমায় গোলাপ কাঁটার মতো বিধংব্সী দাঁত ।
কখনও কোনো উদ্যানের কোণায় পাবলিক লাইব্রেরির কর্নারে ঠেঁসেওঠা বাসের ভীড়ে অফিসের বসের টেবিলের তলে সবুজ বাগানের ভিতরে ফুলের মতো করে কলিগের চায়ের ধূমায়িত পেয়ালায়—আমাকে দারুণ হিংস্রতায় গিলে খাচ্ছে সভ্যতা ।
অথচ আমি একজন মৃত্তিকা মানুষ হতে এসেছিলাম তুমুলতীব্রবেগে এসেছিলাম প্রবাহমানস্রোতধারার মতো দারুণ সোঁদামাটির মানুষ হতে তোমাদের মমতাময়ী মা – মানবী হতে ।
তোমরা নিদারুণ অসম্মানে আমাকে নিস্তেজ নিশ্চল পাথরে রূপায়িত করলে একবুক আত্মচিৎকার নিয়ে আমাকে প্রস্থান করতে হলো—উত্তরের দিকে ।
তবুও যদি আমি সভ্যতাকে নিদারুণ ক্ষোভে ফেঁটে গিয়ে খেতে চাই দুঃসাহসীফুলনদেবীর মতো আমাকে রাষ্ট্রদ্রোহী অপবাদে অপরাধী করতে তোমরা এতোটুকু দশমিক বিন্দুপরিমাণ ক্ষান্ত হওনা !
তোমরা কি তাই বলতে চাও আমার চিৎকার করার অধিকারটুকুও নেই— সৈরাচারিসরকারের মতো ঠোঁটিচেঁপেধরো তুমুল চিরতরে দম বন্ধ হয়ে আসে আমার!
আমি তোমাদের নিদারুণ অবহেলায় সবুজাভ পৃথিবীর পথ হতে—ক্লান্ত শরীর নিয়ে নক্ষত্রের মতো ঝরেপড়ি অমাবস্যারাতের মতো আমার আর কোনো অবলম্বনের উপায় চক্ষু প্রাণ কিছুই থাকেনা।
রাষ্ট্র তোমার মননে মস্তিষ্কে কখনও তুমুল ধর্মের বেসাতি কখনও প্রচলিত ধর্মান্ধতার বুলি কখনো তুমুল হয়ে ওঠে—এইসব জগাঁখিচুরি মাঁখানো ভোটের রাজনীতি !
সময়ের শরীরে আচমকা তুমি হয়ে ওঠো শরাবীনেশায়বুঁদ মধ্যরাতের মদপ্য মাতালের মতো যার কাছে সন্ধ্যাও—বিভ্রমে মনে হয় দারুণ ঝলমলে দুপুর ।