বাংলা সিনেমার জীবন্ত কিংবদন্তি নায়িকা রোজিনা। সোনালী যুগের এই অভিনেত্রীর বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকলেও করোনার এ সময়টাতে বাংলাদেশেই আছেন। করোনায় কেমন কাটছে তার সময় এ নিয়ে কথা বলেছেন কলম২৪.কম এর এক্সিকিউটিভ এডিটর সৈয়দ ইয়াছিনের সাথে।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ কেমন আছেন আপা?
রোজিনাঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, তুমি কেমন আছো?
সৈয়দ ইয়াছিনঃ আলহামদুলিল্লাহ। করোনায় খুব বিপদেই সব সেক্টরের মানুষ। কেমন কাটছে আপনার সময়।
রোজিনাঃ আর বলো না, খুব খারাপ অবস্থা দেশের, দেশের কোথায় সারা পৃথিবীতেই তো একই অবস্থা। এমন বিপর্যয় কেউ কল্পনা করেনি। পৃথিবীর এ দুর্যোগ কবে কাটবে, কবে আবার শান্ত হবে সব, আল্লাহই ভালো জানেন। দম বন্ধ হয়ে আসছে।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ এর মধ্যে বের হন না? বা কাজের কি অবস্থা?
রোজিনাঃ কাজ তো এমনিতেই করছি না, সে মানের কাজ কই? আর করোনা পরিস্থিতিতে সরকারী নির্দেশনায় তো প্রায় সব কাজই বন্ধ। আমিও গত মার্চের ২২ তারিখ থেকে বাসাতেই আছি, বের হইনি একদম। মাঝে একদিন এফডিসিতে গিয়েছিলাম শিল্পী সমিতির একটা কাজে।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ শুনেছি শিল্পী সমিতির ত্রান কাজে আর্থিক সহযোগীতা করেছেন।
রোজিনাঃ সহযোগীতার চেষ্টা করেছি মাত্র। ফিল্মের দুর্দিনের মধ্যে করোনায় আরো বেগতিক অবস্থায় আছে এফডিসি কেন্দ্রীক অনেক শিল্পী, টেকনেশিয়ান ও ছোটো খাটো কাজ করা লোকজন। তাদের চিন্তা করেই সহযোগীতার চেষ্টা করেছি।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ বাসায় সময় কিভাবে কাটছে?
রোজিনাঃ অফুরন্ত অবসর, রোযায় ইবাদত করেই কেটেছে বেশি। এছাড়া সিনেমা দেখি, বই পড়ি, গানই শুনি বেশি। এছাড়া তুমি তো জানো আমার বাসায় অনেক ফুল, ফলের গাছ, এগুলোর যত্ন আত্তিতেই সময় যাচ্ছে। মাঝে মাঝে শখের বশে রান্নাও করছি। এছাড়া বাড়িতে নির্মিতব্য মসজিদের কাজের খোঁজখবর নিতে হচ্ছে সব সময়।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ আপনার গ্রামের বাড়িতে মসজিদের কাজ কতদূর?
রোজিনাঃ মসজিদটা আমার মায়ের স্বপ্ন। মূল বিল্ডিংয়ের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে, বারান্দাসহ টুকিটাকি কিছু কাজ বাকি। করোনার কারনে যাওয়া হচ্ছে না। তানাহলে কাজে আরো গতি আনতে পারতাম।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ ওখানেও ত্রান দিয়েছেন শুনলাম।
রোজিনাঃ হ্যা, আমার গ্রামের ও আশপাশের গ্রামের কিছু হত দরিদ্রের মাঝে অল্প কিছু দেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। আসলে আমাদের শুধু সরকারের দিকে চেয়ে থাকলে হবে না। সামর্থ্যবানের সাধ্যমত এগিয়ে আসা উচিত।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ সামনে কাজের কি প্ল্যান?
রোজিনাঃ আপাতত কোনো কাজের পরিকল্পনায় নেই। আগের করোনা পরিস্থিতির অবসান হোক। তারপর অবস্থা বুঝে চিন্তা করবো।
সৈয়দ ইয়াছিনঃ ভক্তদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
রোজিনাঃ আসলে আমাদের দেশের বেশির ভাগই খেটে খাওয়া মানুষ, ঘরে বসে কতো দিন থাকা যায়? রোজগারে যেতেই হয়, হবে। তাই সবারই সর্বোচ্চ সতর্কতায়, প্রপার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তবে কাজে যাওয়া উচিত। আর এখন পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, আপনি আমি আমরা সবাই কঠোর সচেতন না হলে হবে না, আমরা সবাই এক সাথে সচেতন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমেই করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হবো। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য আপনাকে বাঁচতে হবে, সুস্থ্য থাকতে হবে।
Comments
comments