ঢাকাশুক্রবার , ৪ ডিসেম্বর ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রেম থেকে পরকিয়া; বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় প্রেমিকাকে হত্যা!

প্রতিবেদক
Kolom 24
ডিসেম্বর ৪, ২০২০ ৯:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে (১৪ নভেম্বর) শনিবার আচমিতা জর্জ ইনস্টিটিউশনের পাশের একটি জমি থেকে নুরুন্নাহার (২৬) নামের এক অজ্ঞাত যুবতীর মৃত দেহ উদ্বার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে অজ্ঞাত যুবতীর পরিচয় পেতে মরিয়া হয়ে উঠে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওইদিন দুপুরে কলম২৪.ডট কমে একটি সংবাদ প্রকাশ হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। পরে কলম২৪ ডট কম কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হলে পুলিশ নুরুন্নাহারের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

এদিকে ১৪ নভেম্বর শনিবার অজ্ঞাত লাশের সংবাদ পেয়ে কিশোরগঞ্জের পিবিআই ক্রাইমসীন ইউনিট উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিংগার প্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাত লাশের পরিচয় উদঘাটন করে কটিয়াদী থানা পুলিশকে অবগত করে। ঘটনার শুরু হতে পিবিআই কর্তৃক ছায়া তদন্ত অব্যাহত থাকে।

১৬ নভেম্বর নুরুন্নাহারের ভাই জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে বাদীর উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ সূত্রোক্ত মামলাটি রুজু করতে পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ আনোয়ার হোসেনের উপর তদন্তভার অর্পন করেন।

অভিযোগ সূত্র জানা যায়, গত ০৫ মাস পূর্বে করিমগঞ্জ থানার জনৈক রুবেলের সেলাই মেশিন দিয়ে কাজ করে জীবিকা নিবার্হ করতেন নুরুন্নাহার (২৬)। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে নুরুন্নাহার তার ছেলে দুহাই (২.৫)কে তার ছোট বোন শামসুন্নাহারের নিকট রেখে ময়মনসিংহ উকিল বাবাকে দেখতে যাবে মর্মে বাসা থেকে বের হয়। পরে শনিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাদী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানতে পারেন তার বোন নুরুন্নাহারের লাশ কটিয়াদী থানা পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জে পাঠিয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামীগণ পূর্ব পরিকল্পিত মোতাবেক তার বোন নুরুন্নাহারকে গলায় রশি বা কাপড় পেঁচিয়ে হত্যা করেছে মর্মে অভিযোগে উল্লেখ করেন।

পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআইতে) মামলাটি স্থানান্তর করেন। মামলা নং-২৪। ভিকটিম নুরুন্নাহার হত্যা মামলাটি পিবিআই সিডিউলভূক্ত হওয়ায় পিবিআই গত ১৮ নভেম্বর মামলাটি অধিযাচন করত পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ জামির হোসেন জিয়া এর উপর তদন্তভার অর্পন করেন। তদন্তকারী অফিসার আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে গত ০২ ডিসেম্বর গাজীপুরের টঙ্গী থানার দেওড়া এলাকা হতে ভিকটিম হত্যার সন্ধিগ্ধ থেকে আসামী রুবেল আহম্মদ (৪৪) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত রুবেল করিমগঞ্জ উপজেলার নয়াকান্দি গ্রামের আঃ হামিদের পুত্র। পরে আসামী নিহত নুরুন্নাহারকে নিজেই পরিকল্পিতভাবে একা হত্যা করেছে মর্মে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদান করে।

জবানবন্দিতে রুবেল বলেন, রুবেল বিবাহিত। তার দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। ঘটনার আনুমানিক বছর খানিক পূর্বে আসামী রুবেল তার চাচী শাশুরি ময়না বেগমের বাড়িতে যায়। তখন চাচী শাশুরি রুবেল আহম্মেদকে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। উক্ত বাড়িতে আসামী রুবেল আহম্মেদের সাথে ভিকটিম নুরুন্নাহারের পরিচয় হয়। পরে ভিকটিম নুরুন্নাহার আসামী রুবেলকে মামা এবং উক্ত আসামী ভিকটিমকে খালাম্মা বলে সম্বোধন করে। পরিচয় পর্বে দুই জন দুইজনের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে আসামী রুবেল এবং ভিকটিম নুরুন্নাহারের মধ্যে প্রায়ই কথা হয়।

কয়েকদিন পর ভিকটিম নুরুন্নাহার রুবেলের মোবাইলে ফোন দেয়। তারপর তার ব্যক্তিগত বিষয়ে আলোচনা করে। এক পর্যায়ে নুরুন্নাহার রুবেল ঢাকায় গামেন্টসে কাজ করতেন বলে জানায়। করোনার কারণে কোন কাজ কর্ম নেই। তাই তার কাছে সেলাইয়ের কাজ শিখতে চায় নুরুন্নাহার। ভিকটিম নুরুন্নাহারকে রুবেল সেলাই কাজ শেখানোর কথা বলে করিমগঞ্জ পৌরসভার বেপারী পাড়া (কলু পাড়া) রেনু মিয়ার বাসায় ১৭০০/-(এক হাজার সাতশত) টাকায় ভাড়া বাসা ঠিক করে দেয়। সেলাই কাজ করার জন্য রুবেলের বাসা থেকে একটি বাটারফ্লাই সেলাই মেশিন এনে দেয়।

প্রায় সময় রুবেল ভিকটিম নুরুন্নাহারের বাসায় আসা যাওয়া করে। রুবেল নুরুন্নাহারকে প্রায়ই কাপড় কিনে দিতেসন। মাঝে মধ্যে বাজার সদাইও করতেন। রুবেল প্রায় সময় নুরুন্নাহারের বাসায় খাওয়া দাওয়া করে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। এরপর দুইজনেরর মধ্যে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। তাদের মধ্যে বেশ কযেকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। পরে ভিকটিম নুরুন্নাহারকে কাপড়ের দোকান দিবে বলে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা কৌশলে নিয়া নেয় রুবেল।

পরবর্তী সময়ে রুবেলকে ভিকটিম নুরুন্নাহার তার পাওনা টাকা ফেরত ও তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। গত ১৩ নভেম্বর রুবেল নুরুন্নাহারকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখায়। পরে ভিকটিম নুরুন্নাহারের তার ছেলেকে ছোট বোন শামছুন্নাহারের কাছে রেখে গিয়ে বাসা থেকে বের হয়। পরে কিশোরগঞ্জ থেকে রুবেল-নুরুন্নাহার পৃথক পৃথক ভাবে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড এসে একত্রিত হয়ে সাথে সাথে তাদের হাতে থাকা মুটোফোন ফোন বন্ধ করে দেয়।

তারা যুগল দু’জন কটিয়াদী- বাজিতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রাত অনুমান ১০/১১ টার সময় ভিকটিম নুরুন্নাহারকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে রুবেল তার মুখ চেপে ধরে ভিকটিমের সাথে থাকা নতুন শাড়ী দিয়ে নুরুন্নাহারের গলায় প্যাচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পাশের ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়। বর্তমানে কটিয়াদী মডেল থানায় মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় আছে।

Comments

comments