ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৬ এপ্রিল ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাতে আতঙ্কে মানুষ

প্রতিবেদক
Kolom 24
এপ্রিল ৬, ২০২৩ ৬:১২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জের অলিগলিতে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত বেড়েছে। রাস্তা দিয়ে চলাফেরা যেনো দুঃসাধ্য। শহরের অলিতে-গলিতে ৬-৭টি করে কুকুর একত্রে দল বেঁধে ঘুরাফেরা করে। অনেক ক্ষেত্রে পথচারীদের দেখে ঘেউ ঘেউ করে কামড়াতে আসে। বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের জন্য এখন বেওয়ারিশ কুকুর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদেরও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ জনগণ। এসব কুকুরের কামড় ও আচড়ে জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

সম্প্রতি জেলা শহরের কালিবাড়ি মোড়, খরমপট্টি, গৌরাঙ্গবাজার, পুরানথানা, কাচারি বাজার, গাইটাল বটতলা, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গাইটাল ফার্মের মোড়, গাইটাল বাসস্ট্যান্ড, হারুয়া, একরামপুর, রেলস্টেশন, গুরুদয়াল কলেজ, আখড়া বাজার, নগুয়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দিন ও রাতে কুকুরের উৎপাত লক্ষ্য করা গেছে।

জেলা শহরের শোলাকিয়া এলাকার বাসিন্দা এ এইচ অনিক হাসান গত ২১ মার্চ তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেন, গত তিন যাবত পাগলা কুকুরের কামড়ানোর উৎপাত ক্রমশই বেড়ে চলছে। স্কুল ও মাদ্রাসার কিছু ছাত্রছাত্রীদের কুকুরের কামড়ের আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে এবং ৪ জন গৃহবধূ কুকুরের কামড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। উনার মাথায় ৪০ টা সিলি লেগেছে। এ নিয়ে আমরা এলাকাবাসীরা খুবই আতংকের মধ্যে আছি। ঘর থেকে বের হতে পারছি না। ছোট বাচ্চারা স্কুল মাদ্রাসায় যেতে পারছে না। এমতবস্থায় পৌর কাউন্সিলর ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

জেলা শহরের খরমপট্টি এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার বলেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে ক্রমেই কুকুরের সংখ্যা বেড়ে চলছে। দিনে বেওয়ারিশ কুকুরের বিচরণ কম চোখে পড়লেও বিকেল গড়াতেই বাড়ছে সংখ্যা। ভয়ে বাসা থেকে বের হতে পারিনা। যেকোনো সময় কামড়াতে পারে, এ আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।

জেলা শহরের গাইটাল বটতলা এলাকার দোকানদার আহাদ বলেন, ভাই এত কুকুর। রাস্তায় বের হলেই ঘেউ-ঘেউ করে তেড়ে আসে। আর রাত হলেতো কথাই নেই। ৪/৫ টা করে কুকুর দোকানের সামনে এসে বসে থাকে। অনেক সময় ক্রেতারা ভয়ে আসতে চায় না। কুকুর নিয়ে সবাই আতঙ্কে আছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, কুকুরের কামড়ে সংক্রমণ, টিটেনাস রোগের আশঙ্কা থাকে। শিশুদের নাক-মুখে কুকুর কামড়ালে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই তারা মারা যায়। র‌্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানর বা চিকার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। আমাদের দেশে মূলত কুকুরের কামড়ে বা আঁচড়ে (রক্ত বের না হলেও) জলাতঙ্ক রোগ বেশি হয়।

তাদের মতে, শরীরের কোন অংশে কামড় বা আঁচড় দিয়েছে, তার মাত্রার ওপর নির্ভর করে কতদিনে জলাতঙ্ক দেখা দেবে। সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে তিন মাসের মধ্যে লক্ষণ দেখা দেয়। শরীরের নিচের অংশে কামড় বা আঁচড় দিলে এবং এর মাত্রা কম হলে সাত বছর সময়ের মধ্যে যেকোনো সময় জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গেলে মানুষ সাধারণত বাঁচে না।

শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক চিকিৎসক মীর নূর উস সাদ সৈকত বলেন, জলাতঙ্ক একটি শতভাগ ফেটাল রোগ। র‌্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। কুকুর কামড়ালে আতঙ্কিত না হয়ে সাবান দিয়ে প্রবাহমান পানিতে ১০-১৫ মিনিট ক্ষত স্থান ধুয়ে দিতে হবে। দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন চিকিৎসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কুকুরের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে পৌরসভা কতৃপক্ষ। আমরা কুকুরের দ্বারা আহত হলে চিকিৎসা দেই। জেলায় এ পর্যন্ত কতগুলো জলাতঙ্ক টিকা দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ তথ্য এখন আমাদের কাছে থাকে না। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরাসরি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে এ তথ্য প্রেরণ করে। তবে হাসপাতালে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধকের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ পারভেজ মিয়া বলেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে। বেওয়ারিশ কুকুরকে ভ্যাক্সিন দেয়ার কার্যক্রম আমাদের হাতে নেই। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে ঢাকা থেকে বেওয়ারিশ কুকুরকে ভ্যাক্সিন দেয়ার টিম আসলে আমরা তাদের সহযোগিতা করি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম বলেন, বেওয়ারিশ কুকুরকে স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্যাকসিন দিয়ে থাকে। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বেওয়ারিশ কুকুরকে টিকাদান কার্যক্রমে আমরা সহযোগিতা করি। আমরা বাসা-বাড়িতে পোষ্য কুকুরকে চিকিৎসা দেই। পোষ্য কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিরোধে যে টিকা দেয়া হয় তা সরকারিভাবে দেয়া হয় না। বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।.

Comments

comments