ঢাকাশুক্রবার , ১৬ জুন ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে সাড়ে চার বছরে বজ্রপাতে ৬৭ জনের প্রাণহানি

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুন ১৬, ২০২৩ ৫:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কিশোরগঞ্জে গত সাড়ে চার বছরে বজ্রপাতে ৬৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোট ৯ জন। নিহতের মধ্যে পুরুষ ৫৯ জন, নারী ৪ জন ও শিশু ৪ জন। এদের মধ্যে কৃষক পেশার ৩৬ জন, জেলে পেশার ৭ জন এবং ২২ জন অন্যান্য পেশার ও শিশু নিহত হয়েছেন। দিন দিন নিহতের সংখ্যা বাড়লেও কিশোরগঞ্জে বজ্রপাত প্রতিরোধে নেই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা।

জানা যায়, দেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে কিশোরগঞ্জে। কৃষি কাজ করার সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এর পর নদীতে, হাওরে, বিলে, পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে বাড়ির আঙ্গিনায় কাজ করার সময়, হাওর থেকে গরু আনার সময়, মাঠে কাজ করার সময়, বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে কাজ করার সময়, রাতে বাড়ির উঠানে গৃহস্থালির কাজ করার সময়, বাচ্চাদের সাথে খেলার সময়, বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়ানো অবস্থায় বজ্রাঘাতে মানুষ মারা গেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে জেলায় বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন, ২০২০ সালে নিহত হয়েছেন ১১ জন, ২০২১ সালে নিহত হয়েছেন ১৬ জন, ২০২২ সালে নিহত হয়েছেন ১০ জন, ২০২৩ সালের জুন মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত জেলায় বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন ১৩ জন। হাওর অধ্যুষিত করিমগঞ্জ, তাড়াইল, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী ও বাজিতপুর উপজেলায় গত সাড়ে চার বছরে বজ্রপাতে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে লাইটিনিং অ্যারেস্টারসহ লাইটিনিং শেল্টার নির্মাণ এবং আর্লি ওয়ার্নিং ফর লাইটিনিং, সাইক্লোন অ্যান্ড ফ্লড-এই দুইটি প্রকল্প কিশোরগঞ্জে নেই তবে ফ্লাড শেল্টারের আওতায় লাইটিনিং অ্যারেস্টার বসানো হয় বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয়।

সূত্র জানায়, তাপমাত্রা ও বাতাসে সিসার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া, জনজীবনে ধাতব পদার্থের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া, প্রচুর মোবাইল ফোন ব্যবহার ও এর রেডিয়েশন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, বনভূমি বা গ্রামাঞ্চলে উঁচু গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, জলাভূমি ভরাট ও নদী দখলসহ নানা কারণে বজ্রপাতে মৃত্যু বাড়ছে।

বজ্রপাত বাড়ার সঙ্গে বিশ্বময় তাপমাত্রা পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্লেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুইটি। প্রথমটি বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া, এক ডিগ্রি উষ্ণতা বাড়লে ১২ শতাংশ বজ্রপাত বেড়ে যায় এবং দ্বিতীয়টি গ্রামাঞ্চলে গাছ বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যে সব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস  হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ মারা যায়, গবাদি পশুও মারা যায়।”

নিকলী আবহাওয়া অফিস বলছে, এপ্রিল থেকে জুন মাসে বজ্রপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। এ সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই নিরাপদে থাকা যেতে পারে। এড়ানো যেতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানি।

স্থানীয়রা জানায়, হাওর অধ্যুষিত এই জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে নিয়মিত বজ্রপাতে এই হতাহতের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় এলাকায় আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষ করে ধানকাটা মৌসুম ও বর্ষা মৌসুমে বজ্রপাত বেশি হওয়ায় হাওরের হাজার হাজার কৃষক ও কৃষি পরিবার, জেলে পরিবারে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আবুজর গিফারী বলেন, আমার পরামর্শ হল বজ্রপাতের সময় ধানক্ষেত বা খোলামাঠে যদি কেউ থাকে তাহলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে পড়তে হবে। বজ্রপাতের আশংকা দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। ভবনের ছাদে বা উঁচু ভূমিতে যাওয়া উচিত হবে না। কোন ধাপব পদার্থে স্পর্শ করা যাবে না এবং বজ্র নিরোধ দন্ড লাগাতে হবে।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর রহমান বলেন, প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। কৃষকদের সচেতন করা এবং এলাকায় বড় গাছ সংরক্ষণ করাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তালগাছ প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। এটা কোনো ফল দেয়নি।

Comments

comments