প্রতিনিধি, কিশোরগঞ্জ
শুধুমাত্র জোরালো উদ্যোগের অভাবে আলোর মুখ দেখছে না কিশোরগঞ্জ বিসিক। অথচ একটু সুনজর দিলেই ঘুঁচবে অন্ধকার, দেখবে আলোর মুখ। প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃৃষ্টি হবে। দরকার শুধু সরকারী পদক্ষেপের।
কিশোরগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর প্রায় ২০ একর জায়গার মধ্যে রয়েছে ১৫০টি প্লট। শিল্প ইউনিট ৬৪টি। উৎপাদনরত ইউনিট ২৯টি। নির্মণাধীন ইউনিট ৭টি। নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি এমন প্লট ৯টি। রুগ্ন ইউনিট ৬টি। নির্মাণ কাজ সমাপ্ত কিন্তু উৎপাদনে যায়নি এমন ইউনিট ১১টি। মামলাধীন রয়েছে ২টি। ১০টি প্লট খালি রয়েছে যার মধ্যে ৭টি প্লটের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ বিসিকের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও শিল্প উদ্যোক্তরা জানান, নানান প্রতিকূলতার মাঝেও এগিয়ে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জ বিসিক। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। দরকার শুধু সরকারী পদক্ষেপের। বিসিকের শিল্প শক্তিশালী করা প্রয়োজন। কিশোরগঞ্জ তথা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করছি।
কিশোরগঞ্জ বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক জাফর বায়েজীদ জানান, বিসিককে গতিশীল করা দরকার। বর্তমান সরকার বিসিককে গতিশীল করার জন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। ইউনিটগুলো কেন উৎপাদনে যাচ্ছে না সম্র্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে শিল্প উদ্যোক্তরা উৎপাদনে যেতে পারছে না। বরাদ্দের অভাবে শিল্প নগরীর অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে।
তবে ২০১৮ সনের নভেম্বর মাসে কিশোরগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী পরিদর্শনকালে ঢাকা বিসিকের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ পরিচালক জীবন কুমার চৌধুরী, শিল্প নগরী ও সমন্বয় শাখার উপ মহাব্যবস্থাপক বসির আহমেদ, ঢাকা বিসিকের আঞ্চলিক পরিচালক আহসান হাকিম কিশোরগঞ্জ বিসিকের সমস্যাদি জানতে চেয়েছিলেন তখন অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ড্রেনেজ সিস্টেম নষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যাদি উপস্থাপন করা হয়। উনারা বিষয়গুলো শোনার পর সমস্যাদি খুব শীঘ্রই সমাধানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
তিনি আরও জানান, প্রতি অর্থবছরে ৩ দিন ব্যাপী করে ৩টি প্রশিক্ষণ কর্মশালা করা হয় নতুন শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে। বিনীত ঋণ কর্মসূচীর মাধ্যমে সব্বোর্চ এক লক্ষ টাকা করে ঋণ দেয়াও হয়ে থাকে।
খালি প্লট সর্ম্পকে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরী কর্মকর্তা এস. এম. আসলাম কবির জানান, চেম্বার অব কমার্স এবং শিল্পনগরীর উদ্যোক্তাদেরকে নিয়ে শিল্পনগরীতে অব্যবহৃত প্লট এবং নির্মণাধীন শিল্প ইউনিটের নির্মাণ কাজ নীতিমালা অনুযায়ী সম্পন্ন করে উৎপাদন শুরু করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং ইতিমধ্যে অত্র কার্যালয় হতে উদ্যোক্তাদেরকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হয়েছে। উদ্যোক্তারা চিঠির উত্তর দিয়েছেন।
বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির সভাপতি আজমল খান জানান, কিশোরগঞ্জে শিল্প উদ্যোক্তার অভাব নেই, অভাব হলো পরিবেশের। কিশোরগঞ্জের বিসিক শিল্পনগরীকে গতিশীল করলে উদ্যোক্তারা সাহস পাবে। তারা বিনিয়োগ করতে সাহস পাবে। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। বিসিক শিল্পনগরীতে আমরা অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। বিসিক শিল্পনগরীতে গ্যাস সংযোগের জটিলতার কারণে উৎপাদন খরচ বেশি হয়। ড্রেনেজ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ থাকার কারণে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধাও পাচ্ছি না।
কিশোরগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ মুজিবুর রহমান বেলাল জানান, বিসিকের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে উদ্যোক্তারা উৎপাদন কার্যে যেতে পারছে না। আমি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই যদি সরকার বিসিকের দিকে সুনজর দেয় তাহলে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। কিশোরগঞ্জ তথা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে বিসিক।
