ঢাকামঙ্গলবার , ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৭১ বছর হয়ে গেলেও স্থাপিত হয়নি শহীদ মিনার

প্রতিবেদক
Kolom 24
ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩ ১:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দেখতে দেখতে ৭১ বছর হয়ে গেল ভাষা আন্দোলনের। কিন্তু ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের এন সহিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে নেই মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গের প্রতীক শহীদ মিনার। প্রাচীন এ বিদ্যালয়টিতে শহীদ মিনার না থাকায় রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারদের মতো ভাষাপ্রেমির রক্তমাখা দরদ, মমত্ব আর ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করাতো দূরের কথা ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাসই জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে পায়ে হেটে গিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেনও বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এন সহিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো সদর উপজেলার সরকারি আর্দশ শিশু বিদ্যালয়, তমালতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শোলাকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডি.এল লাহিড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাড়াইল উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল ইউনিয়নের ভেরনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাড়াইল আর্দশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাউতি ইউনিয়নের শিমুলাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দামিহা ইউনিয়নের গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুইশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেলেও এর ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা নেওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তবে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বলছে মাত্র ১৮টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় শিক্ষাবিদ ও সাধারণ মানুষ। তাঁরা বলছেন, বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র পরিচয় মিহিত রয়েছে তার নিজস্ব ভাষা এবং ভাষিক আবহে গড়ে ওঠা সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। বিশ্বের বুকে একমাত্র বাঙালি জাতিই তাদের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সংগ্রাম করেছে, রাজপথ রঞ্জিত করেছে বুকের তাজা রক্তে। শহীদ মিনার হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি। মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠাতার সাহসী চেতনা। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মান অর্জন করা সত্ত্বেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের অন্তরালে থেকে যাবে।

এন সহিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষক মো: শহীদুল ইসলামের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মো: শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিশুদের বাস্তবভিত্তিক ইতিহাস জানার জন্য বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাঞ্চনীয়। এতে করে শিশুদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে শিশুদের মধ্যে জানার আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করছি খুব শীগগিরই আমাদের বিদ্যালয়েও শহীদ মিনার স্থাপিত হবে।

সূত্র জানায়, গৌরবময় সেই ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পার হলেও জেলার দুইশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোনো স্থায়ী শহীদ মিনার। এর মধ্যে বিশটিরও অধিক বিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গা নেই বলে স্থাপন করা যাচ্ছে না শহীদ মিনার। জেলায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১৩২৮টি। তবে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে মাত্র ১৮টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি। এদিকে জেলার ১৪৫টি মাদ্রাসার মধ্যে ৮টি মাদ্রাসায় রয়েছে শহীদ মিনার। অন্যদিকে জেলার কিন্ডার গার্ডেন স্কুলগুলোর ৯৫ ভাগই শহীদ মিনারহীন।

ভাষা আন্দোলন ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারির সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে শিশু শিক্ষার্থীদের ধারণা দিতে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি অভিভাবকদের। আনোয়ার হোসেন, খাইরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান স্বপনসহ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, শিশু বয়স থেকে নিজ দেশ, দেশের ভাষা, দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনারের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাঙালি জাতি একে একে অগ্রসর হয়েছে ১৯৭১ সালের মুক্তি সংগ্রাম তথা স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকে। আর সে লক্ষ্যেই শহীদ মিনার আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাছে বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের সন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ ও তাৎপর্য বহন করবে।

কিশোরগঞ্জ সরকারি গুরুদয়াল কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ.এস.এম সাইফুজ্জামান বলেন, ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল করার জন্য ও মমত্ববোধ জন্মানোর জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেসকল প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে সেখানে অবশ্যই একটি করে শহীদ মিনার স্থাপন করা উচিত। এতে ভাষার প্রতি শিশুরা যেমন শ্রদ্ধাশীল হবে তেমনি ভাষা শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মান জানানো সম্ভব হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার বণিক বলেন, কিছু বিদ্যালয়ে জায়গার সংকট রয়েছে। জায়গা ব্যবস্থা করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সবগুলো বিদ্যালয়েই স্থায়ী শহীদ মিনার করে ফেলবো।

Comments

comments