গৃহকর্মী কিশোরী মনি আক্তারকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় সেই গৃহকর্ত্রী জবা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ১৯ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তার স্বামী রয়েলকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা জানান, আজ (সোমবার) সকালে গৃহকর্ত্রী জবা ও তার স্বামী রয়েলকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৃহকর্মী মনির বাবা আ. মোতালিব বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের (২০১৯সালের) ১ ডিসেম্বর পার্শ্ববর্তী তালদশী গ্রামের ইউনুছ আলীর মেয়ে মরিয়মের মাধ্যমে উত্তরার রয়েল-জবা দম্পতির বাসায় মাসিক তিন হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মীর কাজ দেন শিশু মনিকে (১১)। এর এক মাস পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে গৃহকর্ত্রী জবা মনিকে বকাঝকা ও নির্যাতন শুরু করে। তাকে দিয়ে দিনরাত বাসার সব কাজ করাত। ঘাম ঝড়ানো খাটুনি শেষে খাবার চাইলে সেটিও দিত না। মাঝে মধ্যে পঁচা বাসি খাবার দিত। তা সে খেতে পারত না। ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করত। এসব নিয়ে গৃহকর্তা রয়েলের কাছে বিচার দিলে তিনিও তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করতেন। কোনো কাজ শেষ করতে একটু দেরি হলেই স্বামী-স্ত্রী মিলে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হতো তার শরীরে। এ ছাড়া লাঠি ও রুটি বানানোর বেলন দিয়ে বেধড়ক পেটাত। খুন্তির ছ্যাঁকা আর লাঠি ও বেলনের পিটুনিতে তার মাথা ও হাত-পায়ের আঙ্গুলসহ পুরো শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। সে এখন হাঁটতে ও চলতে পারে না।
পাকুন্দিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শ্যামল জানান, উত্তরা পশ্চিম থানার উপ পরিদর্শক আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাকুন্দিয়া থানায় আসে। সেখানে গিয়ে নির্যাতিতা গৃহকর্মী মনি ও তার মা নিলুফার সঙ্গে আলাপ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে মনির মা নিলুফাকে সঙ্গে নিয়ে গৃহকর্মী সরবরাহকারী মরিয়মের বাড়িতে গিয়ে তাকে আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে মরিয়মকে সঙ্গে নিয়ে উত্তরার ওই গৃহকত্রীর বাসায় গিয়ে জবাকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানায় নিয়ে আসে।
Comments
comments