আলুর চাহিদা বেশি থাকায় এবার আলু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। কিন্তু আলু চাষের মৌসুমে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েও হতাশ কিশোরগঞ্জের কৃষকরা। কারণ জেলায় দেখা দিয়েছে বীজ আলুর সংকট। চড়া দাম দিয়েও মিলছে না বীজ আলু। এ বছর বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বীজ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এজন্য খাবার আলুর মতো বীজও বিক্রি হচ্ছে তুলনামূলকভাবে বেশি দামে। এ অবস্থায় আলুর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জে এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯২০ হেক্টর ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন। ধান কাটার পর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় এবার ব্যাপকভাবে আগাম আলু চাষের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন কৃষকরা। কিন্তু শুরুতেই বীজ সংগ্রহে চরম সংকটে পড়েছেন তারা। সংকটের কারণে বর্তমানে বাজারে ব্র্যাকের সরবরাহকৃত ৪০ কেজির প্রতি বস্তা অ্যাস্টেরিক, ক্যারেজ ও ডায়মন্ড জাতের আলু বীজ জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়। আবার অগ্রিম টাকা দিয়েও বীজ পাচ্ছেন না কৃষকরা।
অথচ কোম্পানির নির্ধারিত ডিলারদের ‘এ’ গ্রেড আলু বীজ প্রতিমণ দুই হাজার ২০০ টাকা এবং ‘বি’ গ্রেড দুই হাজার ৮০ টাকায় বিক্রি করার কথা। কিন্তু চাহিদার কারণে বাজারে সংকটের অজুহাতে ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন বীজ ব্যবসায়ীরা।
জেলার বিভিন্ন বাজার ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আগাম আলু চাষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন কৃষকরা। ফলে গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই চাহিদা দেখা দিলে বাজারে সবার আগে বীজ সরবরাহ করে ব্র্যাক সিড অ্যান্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ। ফলন ভালো হওয়ায় এবার ব্র্যাকের আলু বীজ পছন্দের তালিকায় এক নম্বরে। এজন্য বীজ সংগ্রহে ব্র্যাক অনুমোদিত ডিলারদের কাছে ভিড় জমান আলুচাষিরা।
কিশোরগঞ্জ বিএডিসি হিমাগার সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন জাতের ‘এ’ গ্রেড আলু বীজ প্রতিমণ এক হাজার ৮৮০ টাকা এবং ‘বি’ গ্রেড এক হাজার ৮৪০ টাকা কৃষকের কাছে বিক্রির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ভালো মানের কারণে বিএডিসির আলু বীজের চাহিদা অনেক। তবে আগামীতে বরাদ্দ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ সাইফুল আলম বলেন, আলু বীজের কিছু সংকট রয়েছে। বাজারে যদি বেশি দামে আলু বীজ বিক্রি করা হয় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments
comments