গোরাঙ্গ বিশ্বাস (৫৬)। দেশ স্বাধীনের পর থেকেই হাটে হাটে জলচৌকিতে বসিয়ে ক্ষুর, চিরুনি, সাবান, ফিটকারি, পাউডার ও লোশন নিয়ে নানান ভাবে মানুষের চুল, দাড়ি ও গোঁফ ছাঁটতেন। আর এভাবেই জীবন চাঁকা চলতো তার।
জানা গেছে, ১৯৬০ সনে উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন গোরাঙ্গ। ছোটবেলা সময় থেকেই নরসুন্দর (নাপিতের) কাজ শুরু করেন। ৪ যুগ ধরে কটিয়াদী পুরান বাজারে জলচৌকিতে নরসুন্দর (নাপিতের) কাজ করছেন তিনি। জীবিকার দাগিদে এখনো এই পেশাটি ধরে রেখেছেন গোরাঙ্গ বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার গোরাঙ্গের সঙ্গে কথা হয় কলম২৪ এর। এসময় তিনি জানান, প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাটিতে বসে এসব কাজ করেন। আগে দৈনিক ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা কাজ করতে পারতেন। কিন্তু, বর্তমানে আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ফলে মানুষের চাহিদা কমে যাওয়ায় আয়ের পরিমাণও কমে গেছে। এতে জীবিকা নির্বাহে দেখা দিয়েছে নানা সংকট।
গোরাঙ্গ বিশ্বাস জানান, ‘চার ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোন মতে সংসার চলছে। এখন আর পিঁড়িতে বসে চুলতে কাটতে চায় না মানুষ। তবে হাতেগনা কয়েকজন মুরুব্বি ছাড়া অন্যরা এখানে চুল, দাড়ি ও গোঁফ কাটতে আসেন না।’
তিনি জানান, ‘পূর্বে বার্ষিক চুক্তি হিসেবে কাজ করতাম। কিন্তু বর্তমানে সেই নিয়ম নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বর্তমানে যে পরিবর্তন এসেছে চুল-দাড়ি কাটার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতিও পরিবর্তন হয়েছে। সেসব সেলুনে এখন আর শান দেয়া ক্ষুর দেখাই যায় না। তার বদলে এসেছে ব্লেড লাগানো ক্ষুর। এসেছে শেভিং ক্রিম, লোশন ব্লোয়ার, চুলের কলপ। তিনি যখন এ কাজ শুরু করেন তখন এগুলো ছিল তাদের কাছে কল্পনার অতীত।’
Comments
comments