কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারী নীতিমালা অমান্য করে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে কোচিং বাণিজ্য। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কৌশলে এসব কোচিং সেন্টার চালিয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। যদিও কোচিং বাণিজ্য বন্ধে প্রশাসন নিচ্ছে না কোন কার্যকর পদক্ষেপ।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। তেমনি করে কোচিং বাণিজ্যেও বন্ধের নির্দেশ দেয়া আছে। কিন্তু, এসব বিধিনিষেধ অমান্য করেই প্রকাশ্যেই কোচিং চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় অসাধু শিক্ষকরা। কেউ কেউ নিজস্ব বাসভবনে ব্যাচ আকারে কোচিং করাচ্ছেন। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এসব কোচিং বাণিজ্য গড়ে তুলছেন তারা।
-
শতাধিক কোচিং সেন্টার সক্রিয়
-
কোচিং বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেই
-
নিষেধাজ্ঞাও মানছে না কেউ কেউ
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কটিয়াদী ২ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা আজিজা সুলতানা। তিনি কটিয়াদী পশু হাসপাতালের পিছনে সাইনবোর্ড বিহীন একটি আধুনিক বহুতল ভবনে লকডাউনের ভিতরেও রীতিমতো চালিয়ে যাচ্ছে কোচিং বাণিজ্য। প্রতিদিন ব্যাচ আকারে কোচিং করাচ্ছেন এই প্রাথমিক শিক্ষিকা।অথচ দেড় মিনিট দুরত্বেই রয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এসি ল্যান্ডের কার্যালয়। তারাও নিচ্ছে না কোন আইনি পদক্ষেপ।
অনুসন্ধান বলছে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক নিজেদের বাসভবনে কোচিং ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। বিধিনিষেধ অমান্য করে যত্রতত্র ভাবে এসব কোচিং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। শুধু তাই নয়, কেউ যেন বুঝতে না পারে সে জন্য শিক্ষার্থীদের ভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে পাঠদান করানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ শ্রেণীর কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের ব্যাচের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নিয়মিতই কোচিংয়ে করি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোচিং না করলে নানা ভাবে হেনস্তা করে। তাই প্রাইভেট কিংবা কোচিং করতে বাধ্য হই।
একাধিক শিক্ষক জানায়, পৌর সদরেই অধিকাংশ শিক্ষক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে কোচিং সেন্টার চালু রেখে পাঠদান করছেন। তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রীতিমতো কমান্ডো পদ্ধতিতে কোচিং কিংবা প্রাইভেট বাণিজ্য চালাচ্ছেন। এদিকে, এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহম্মেদ বলেন, ‘কোচিং কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য প্রত্যেক শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ প্রাইভেট কিংবা কোচিং সেন্টার খোলা রাখলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কটিয়াদী ইউএনও জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, ‘ইতোমধ্যে কোচিং সেন্টার বন্ধে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেছি। যারা আইন অমান্য করে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Comments
comments