ঢাকাসোমবার , ২২ জুন ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আগ্রহ বাড়ছে ড্রাগন ফল চাষে

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুন ২২, ২০২০ ৯:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ড্রাগন ফল যা পিতায়য়া নামেও পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম “Hylocereus undatus”। গণচীনের লোকেরা এ ফলটিকে আগুনে ড্রাগন ফল এবং ড্রাগন মুক্তার ফল বলে। ভিয়েনামে মিষ্টি ড্রাগন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে ড্রাগন ফল, থাইল্যান্ডে ড্রাগন স্ফটিক নামে পরিচিত। অন্যান্য স্বদেশীয় নাম হলো, স্ট্রবেরী, নাশপাতি বা নানেট্টিকা ফল। এই ফলটি একাধিক রংয়ের হয়ে থাকে। তবে লাল রংয়ের ড্রাগন ফল বেশি দেখা যায়।

ড্রাগন একটি ক্যাকটাস গোত্রীয় ফল। ড্রাগন বিদেশী ফল হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমানে বাংলাদেশে এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে এবং বাণিজ্যিকভাবে এ ফলটির প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে। গাছের কাটিং বা পরিপক্ক শাখা রোপনের এক বছরের মধ্যে ফুল ফল ধরা শুরু হয়। মে মাস থেকে আরম্ভ করে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে ফুল ফল ধরে। ফুল ফুটা থেকে শুরু করে ফল পাকতে ৩০-৩৫ দিন সময় লাগে। ফলটি অতিপুষ্টিকর ভিটামিন ও মিনারেল্স সমৃদ্ধ। বিশেষ করে এ ফলে ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও নিয়াসিনের পরিমাণ খুব বেশি রয়েছে। ফল সুস্বাদু যথেষ্ট মিষ্টি হলেও ডায়বেটিস রোগীদের জন্য আহার উপযোগী। এ ফল অন্য খাবার হজমে সহায়তা করে, দেহের কমীনয়তা আনয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার মত কার্যকর। এ ফলের তৈরী জুস অত্যন্ত শীতল ও তৃপ্তি দায়ক। সালাদ হিসেবেও এ ফলের জুড়ি নেই। কচি ফল তরকারী হিসেবে খাওয়া যায়। এ ফল দিয়ে জ্যাম জেলি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। শুকিয়ে বা প্রক্রিয়া জাত করে অসময়ে খাওয়া যায়। এমনকি রাতে আলো জ্বালিয়ে দিনের দৈঘের্যর পরিমান বৃদ্ধি করে সারা বছর ফল ধরানো যায়। পর্যাপ্ত রৌদ্র পাওয়া যায় এমন জায়গা ও দোঁআশ মাটি এ ফল চাষের জন্য উপযুক্ত এ বিবেচনায় বাংলাদেশে এ ফলটি চাষের প্রচুর সম্ভবনা রয়েছে।

সরজমিনে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষি বিভাগ এ ফলটির চাষ সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে তারই ধারাবাহিকতায় খামা গ্রামের কৃষক খুর্শিদ উদ্দিন সর্ব প্রথম এ উপজেলায় ২০ শতাংশ জমির উপর ৮০টি পিলার এর সাথে ২৪০টি চারা দিয়ে একটি বাগান তৈরী করেন। বাগানটি স্থাপন করতে খুর্শিদ উদ্দিনের ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। ভূমিহীন এই কৃষক বাগানের মধ্য সাথী ফসল হিসেবে টমেটো ও আদার চাষ করে ১ম মৌসুমেই সে তার বিনোয়গকৃত টাকা উঠিয়ে নিতে সক্ষম হয় এবং পরবতর্ীতে অঙ্গ ছাটাই এর মাধ্যমে যে ডালপালা কর্তন করা হয়, তা দিয়ে চারা উৎপাদন করে বাজারে বাজারে ঘুরে বিক্রি করে এবং পাকুন্দিয়া উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি মেলায় চারা বিক্রি করে আরো ৪০-৫০ হাজার টাকা আয় করেন। ৬শত টাকা কেজি দরে ড্রাগন ফল বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যে ২ মণ ড্রাগন ফল বিক্রয় করা হয়েছে। নভেম্বর মাস পর্যন্ত ড্রাগন ফল গাছে ধরবে এবং বিক্রয় করবেন।

জানা যায়, কৃষক খুর্শিদ উদ্দিন এর বাগান থেকে তৈরীকৃত চারা এখন অত্র এলাকার প্রায় বাড়ীর উঠানে একটি/দুটি পিলারে চারা লাগানো দেখতে পাওয়া যায়। এ সম্র্পকে কৃষক খুর্শিদ উদ্দিন বলেন সহায় সম্বলহীন একজন গরীব চাষী হিসেবে এ ফলটি চাষ করতে সাহস পাচ্ছিলামনা তাছাড়া ও বাগান করার উদ্দেশ্যে জমিতে যখন পিলার স্থাপন করি তখন এলাকার লোকজন আমাকে পাগল বলে বলাবলি শুরু করল আমি কিছুটা সাহস হারিয়ে ফেলি, তখন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ ভাইয়ের পরামর্শে আমি হারানো সাহস ফিরে পাই এবং তার দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী এক মৌসুমেই বিনিয়োগকৃত টাকা উপার্জন করতে পারি, এখন সাথী ফসল/কাটিং/ফল এগুলো বিক্রি করে আমার সংসার খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ বলেন, খুর্শিদের বাগান দেখে এ উপজেলায় আরো অনেকগুলো বাগান করা হয়েছে, গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই লাগানো হয়েছে ড্রাগন ফলের গাছ। ড্রাগন ফলের আবাদ বাড়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। তিনি বলেন, ড্রাগনের ফুল প্রথমে লম্বাকৃতির হাতির শুড়ের মত থাকে কিন্তু সন্ধ্যার পর অন্ধকার নেমে আসলে তা গোলাকৃতির সাদা রঙের হয়ে ফোটে। মনোমুগ্ধকর ফুলের অপূর্ব বাহারি রং ও সুমিষ্ট গন্ধ কেবল রাতের বেলায় পাওয়া যায়। সেজন্য অত্র এলাকার লোকজন সন্ধ্যার পর খুর্শিদ উদ্দিনের বাগানে ভিড় জমান এ ফুলটি দেখার জন্য। এটি উভয় লিঙ্গিক হলেও ফুলের গন্ধ ও মধু আহরণে আকৃষ্ট হয়ে রাতে বিচরণকারী অনেক পোকা এসে ফুলের পরাগায়ন ঘটায় ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফুলটি তার সেই সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে পরবর্তীতে আস্তে আস্তে ফলে পরিণত হয়।

কিশোরগঞ্জ খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল আলম বলেন, এক সময় ড্রাগন ফল চাষে কৃষকরা ভয় পেত। লাভের মুখ দেখতে পাবে কি না ? কিন্তু আমাদের কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে তারা সাহস পেয়েছে বিধায় ড্রাগন ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এবং লাভবান হচ্ছে।

Comments

comments