ঢাকাশনিবার , ২৭ জুন ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রযুক্তি সহায়তার অভাবে সবাই অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুন ২৭, ২০২০ ৬:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে ক্লাস-পরীক্ষাও হচ্ছে না। তাই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচ্ছিন্নভাবে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে ক্লাসগুলোতে বিভাগের সব শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারছেন না। যারা অংশ নিচ্ছেন তারা বলছেন, এই সময়ে অনলাইনে ক্লাস করার মতো সব ধরনের সুযোগ নেই। আর যারা অংশ নিতে পারছেন না তারা বলছেন, উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত করা হলে তারাও ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন। তাহলেই অনলাইন ক্লাসের সুফল নিশ্চিত হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক অধ্যাপক বলেন, আমাদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পরিবারের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের সংখ্যাও কম নয়। এ সময়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো সংকটের মধ্যে রয়েছে। আবার এসব পরিবারের সন্তানরা বিভিন্ন কাজে যুক্ত থেকে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নিতেন। বর্তমানে তারাও অবসর সময় পার করছেন। আর অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধাসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন। এসব দিক বিবেচনায় এখনও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার বাস্তবতা তৈরি হয়নি। এজন্য ইন্টারনেটসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আর যেসব শিক্ষার্থীর এসব সক্ষমতা রয়েছে তাদের খোঁজখবর নেওয়াসহ বাড়িতে বসে পড়াশোনার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে শিক্ষকরা অনলাইনে আলোচনা করতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পরিসরের মধ্যে সংযুক্ত থাকতে পারবে। আর যে সেশনজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে তা পরিস্থিতি ভালো হলে অবশ্যই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার ইউজিসির সঙ্গে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের এক সভায় শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার শর্তে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আর গত মঙ্গলবার এটুআই-এর আয়োজনে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম উদ্বোধন বিষয়ক এক ভাচুর্য়াল অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় কয়েকবছর পর যেতেই হতো। করোনা পরিস্থিতির কারণে আমাদের আগে করতো হলো। করোনা পরবর্তী সময়েও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভার্চুয়াল ক্লাস চলমান থাকবে।
অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া ও না নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়। রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন বিভাগে গত ২৪ মার্চ থেকে অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী হাদিসুর রহমান বলেন, আমি অনলাইন ক্লাসের প্রতি আগ্রহী নই। আর একজন শিক্ষার্থীও যদি অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে না পারে তবে ক্লাস নেওয়া উচিত হবে না। অনলাইনে যুক্ত হয়ে ক্লাস করার ক্ষেত্রে অনেকসংখ্যক শিক্ষার্থীর ইন্টারনেটের সহজলভ্যতাসহ স্মার্টফোনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিনুর বলেন, যদিও সবার অনলাইনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগটি ভালো। এতে করে শিক্ষার্থীরা অনলাইন প্লাটফর্মে ক্লাসের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ভাষা সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী জায়েদ হাসান বলেন, বড়ভাই বাড়িতে থাকায় অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ হচ্ছে। বিভাগের অধিকাংশ সহপাঠী ক্লাসে অংশ নিতে পারছে না। ক্লাসে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আইনাল ও সুমনা মৃধা বলেন, এ সময়ে অনলাইন ক্লাসের প্রয়োজন আছে। তবে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করে অনলাইন ক্লাস নেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।

আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন বললেন, অনলাইনে মাত্র ২০ জনের অংশগ্রহণে ক্লাস করছি। কিন্তু সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাও প্রয়োজন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন মাতিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেকটি বিভাগে পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইন ক্লাস হচ্ছে। তবে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। কেননা অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ধীরগতি ও প্রযুক্তি মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠা গেলে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা করা সহজ হবে। শিক্ষার্থীরাও আগ্রহ নিয়ে ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।

সীমাবদ্ধতা আছে স্বীকার করে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মহা. হবিবুর রহমান বলেন, সীমাবদ্ধতা আছে ঠিকই তবে শুরু না করেই সীমাবদ্ধতার জন্য বসে থাকতে পারিনা। করোনার এ সময় আমাদেরকে অনিশ্চিত বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে। তাই শিক্ষা কার্যক্রমকে চালিয়ে নেওয়ার জন্য অনলাইন কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার বিকল্প নেই। আর যারা সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হচ্ছেন তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এক্ষেত্রে তাদের তালিকা তৈরি করে সাধ্যের মধ্যে সহযোগিতাও করা যেতে পারে।

এই অধ্যক্ষ আরো বলেন, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন স্টুডিও তৈরি করা হয়েছে। সবগুলো বিভাগেও ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। ক্লাসের ভিডিওগুলো কলেজ ও বিভাগের গ্রুপে, পেইজে আপলোড করা হচ্ছে। সেখান থেকে যে কেউ সময়মতো ভিডিও দেখে নিতে পারবে। আর শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের ফেসবুক ব্যবহারের ইন্টারনেট খরচ অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণের জন্য ব্যয় করতে পারে।

Comments

comments