ঢাকারবিবার , ২৮ জুন ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

করোনা ভাইরাস ২০২০

প্রতিবেদক
Kolom 24
জুন ২৮, ২০২০ ৩:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

করোনা ভাইরাস নিয়ে কথা বলতে গেলে ৮ই মার্চ এর দিনটির কথা মনে পড়ে যায়। কারণ সেই দিনটিতে প্রথম বাংলাদেশে করোনা সংক্রমিত রোগী পাওয়া যায়।আক্রান্তের সংখ্যা সম্ভবত দুইজন ছিল কিন্তু মৃতের সংখ্যা ছিল শূন্য। এ পৃথিবীতে অনেক মহামারী তার কালো থাবায় ধ্বংস করেছিল অনেক দেশের অস্তিত্ব কিন্তু আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার এই অংশে হয়তো তার প্রভাব খুব একটা পরেনি, যার কারণে তার প্রভাবটা বাঙালিরা খুব একটা বুঝতে পারেনি।

যাইহোক দিন যত গড়াচ্ছিল আক্রান্তের সংখ্যা তত বেড়েই যাচ্ছিল। এরই মধ্যে একদিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য তখন রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা ছিল দেখার মত। মানুষ ভাবল এই বুঝি ঘরের পথ ধরেছে ভাইরাস।দিন যত চলে যাচ্ছিল আক্রান্তের সংখ্যাও যেন সূচকীয় হারে বেড়েই চলছিল, তার সাথে মৃতের সংখ্যাতো বাড়ছেই।আর মানুষও মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ যে যতটুকু পারছিল তার নিরাপত্তার জন্য সামগ্রী জোগাড় করে রাখছিল। একটা সময় এমন হয়েছে যে খুব কম দামি জিনিস গুলো হঠাৎ দরকার পরায় তার দাম বেড়ে যাচ্ছিল দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ কি বা তারও বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন এই ভাইরাস খুব দ্রুতো তার নিজের চারিত্রিক গঠন বদল করতে পারে। ফলে এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে পড়তে হবে চরম জটিলতায়। কোন কোন বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে হয়তো বছর দুয়েক সময় লেগে যেতে পারে। তবে এই ভাইরাস থেকে তৎক্ষণাৎ মুক্তির উপায় কি? বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষের মধ্যে ৩ ফীট বা ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা।কারণ ভাইরাসটি ভীষণ রকমের ছোয়াছে।আবার কোন কোন বিশেষজ্ঞরা “ফ্ল্যাটারিং দ্যা কার্ভ” নীতিতে বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে এই ভাইরাসের দ্রুত মোকাবেলা করতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

কিন্তু এত কিছুর পরেও সকলের মনে একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে, যদি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন অনাবিষ্কৃতই থেকে যায়?! তবে কোন দিকে মোড় নিবে এই পৃথিবীর চাকা? পৃথিবীর অর্থনীতির অবস্থা হবে কেমন? সচল অর্থনীতি বিশিষ্ট দেশগুলোর অর্থনীতির চাকাকি এখন আর সচল থাকবে?

এখন সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সারা পৃথিবীতে চাকরির সংকট দেখা যাচ্ছে। বিদেশে গিয়ে কাজ করে দেশের রেমিটেন্স এর চাকা সচল রাখছে যে মানুষগুলো তারা যদি তাদের চাকরি খুইয়ে বসে তবে কি হবে সে দেশের রেমিটেন্সের অবস্থা, কিভাবে চলবে তার পরিবার? আসলে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগ সকলেই। এ পর্যন্ত আবার কত মানুষ চাকরি হারিয়ে রাস্তার মোড়ে সবজি বিক্রি করতে নেমে পড়েছে।

এত দিন ছুটি ছুটি করে বিরক্ত হওয়া শিক্ষার্থী গুলো এখন এত বিশাল ছুটি পেয়ে তারা হয়েছে বিরক্ত। শিক্ষার্থীদের একটিই প্রশ্ন, কখন খুলবে স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়? কখন দেখা হবে বন্ধুদের সাথে? এই প্রশ্নেরও উত্তর কি দিতে পারবো আমরা কেউ? পড়াশোনার পদ্ধতিটাকে সকলে অনলাইন উপযোগী করে নিচ্ছে। এখন আর সকালে ঘুম থেকে উঠে তাড়াহুড়ো করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে না।তবে এতেও কিন্তু বিরক্ত সকলে।

কি দিয়েছে এই ২০২০ সাল আমাদেরকে? এই ২০২০ কি আমাদেরকে ১৩শ শতকের “ব্ল্যাক ডেথ” এর ২০ কোটি, ১৮শ শতকের “প্ল্যাগ” এর ৫-১০ কোটি, ১৯শ শতকের “স্প্যানিশ ফ্লু” এর অসংখ্য মৃত্যুর মতো এখনো কি অসংখ্য মৃত্যুই উপহার দিচ্ছে? সত্য বলতে কি এসকল প্রশ্নের কোন উত্তর নেই কারো কাছে।

যেখানে আমেরিকা, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, জার্মানির মতো উন্নত দেশগুলো তাদের মৃত্যুর লাগাম টেনে ধরে রাখতে পারছে না সেখানে আমাদের বাংলাদেশে মৃত্যুর হিসেবটা কি করে করব তা বুঝে উঠতে পারছি না। সত্য বলতে কি, তাদের বর্তমান এখন আমাদের জন্য ভবিষ্যৎ।

এই সময়ে ড্যান ব্রাউন স্যারের একটি কথা মনে পড়ে যায়,” যখন এই বিশ্বের সব জায়গা এমনভাবে মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে যে তারা বুঝে উঠতে পারবে না কোথায় তারা আছে অথবা অন্য কোথাও তারা যেতে পারবে না… তখন এই পৃথিবী নিজেই নিজেকে শুদ্ধ করে নেবে।“. -ইনফার্নো

বলতে কষ্ট হলেও এটাই সত্যি যে করোনা ভাইরাসের এই ২০২০ সাল আমাদের অনেককেই তৈরি করবে অনেক বড় লেখক, অনেক বড় ডিরেক্টর, অনেক বড় বিশেষজ্ঞ হিসেবে। এই টপিক নিয়ে অনেকেই তাদের বিখ্যাত বিখ্যাত উপন্যাস সাজিয়ে তুলবে, কোন ডিরেক্টর হয়তো তার নতুন কোন ছবিতে গল্প সাজাবেন এই টপিক নিয়ে, কোন বিশেষজ্ঞ নতুন কোন ভ্যাকসিন নিয়ে আসবে এই ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ রোধে। তবে কি আমরা আমাদের প্রিয় মানুষের মৃত্যুর কথা ভুলে যেতে পারবো?

অবশেষে এই কথাই বলে শেষ করব,
“Maintain your social distance & it is the best vaccine of corona virus.”

মোঃ ওসমান গনি রাসেল
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর
বিভাগ:- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।

Comments

comments