ঢাকামঙ্গলবার , ১২ মে ২০২০
  1. অন্যান্য
  2. আন্তর্জাতিক
  3. খেলাধুলা
  4. দেশজুড়ে
  5. পজিটিভ বাংলাদেশ
  6. ফটো গ্যালারি
  7. ফিচার
  8. বিনোদন
  9. ভিডিও গ্যালারি
  10. সারাদেশ
  11. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর বাম্পার ফলন; দরপতনে চাষীরা হতাশ

প্রতিবেদক
Kolom 24
মে ১২, ২০২০ ৭:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পাকুন্দিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রামের নাম মঙ্গলবাড়িয়া। এ গ্রামের এমন কোন কৃষকের বাড়ি নেই যেখানে অত্যন্ত ৪/৫টি লিচু গাছ নেই। লিচুর চাষ করে এখানকার চাষীদের আর্থিক সচ্ছলতা এসেছে। উন্নত জাতের লিচুর জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে চলতি মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তার উপর প্রতিশত লিচুর দাম উঠছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। চাষীদের মতে প্রতিটি গাছে ১০ থেকে ১২ হাজার লিচু উৎপন্ন হয়ে থাকে এবং একেক মৌসুমে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রায় তিন কোটি টাকার মত লিচু বিক্রি হয়ে থাকে। অথচ এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে পাইকার বা ক্রেতা নেই বললেই চলে ফলে বাম্পার ফলন হলেও কৃষকেরা ন্যায্য দাম পাচ্ছে না।

স্থানীয় অধিবাসী জানান, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে দুইশত বছর ধরে লিচু চাষ হয়ে আসছে। টক্ টকে লাল রং, বড় আকৃতি ও ছোট বীচি সেই সাথে মিষ্টি স্বাদ- এই হচ্ছে মঙ্গলবাড়িয়া লিচুর বৈশিষ্ট্য। এ সমস্ত গুণের কারণেই এখানকার লিচু ইতিমধ্যে দেশে সুনাম কুড়িয়েছে। লিচুর ভরা মৌসুমকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে পাকতে শুরু করেছে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু। বাড়ি-ঘরের আঙিনা এবং রাস্তার দু’পাশে অবস্থিত গাছগুলো ছেয়ে গেছে লাল বর্ণের লিচুতে। চারিদিকে রাঙ্গা লালের সমারোহ মুগ্ধ করছে যে কোন মানুষকে।

সারা দেশের এখানকার লিচুর চাহিদার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু ক্রয়ের জন্য আগত একজন ব্যবসায়ী তৌহিদ মিয়া বলেন, আমি একজন লিচু ব্যবসায়ী। এখান থেকে লিচু কিনে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিক্রি করি। এখানকার লিচুর সারা দেশেই খুব চাহিদা।

মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর উন্নত গুণাগুণ বর্ণনা করে স্থানীয় গ্রামবাসী মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে দুইশত বছর ধরে লিচুর চাষ হয়ে আসছে। আমাদের গ্রামের প্রত্যেক ঘরে ঘরে লিচুর বাগান আছে। এখানকার লিচু আকৃতিতেও বড় এবং খেতেও মজা। সারা বাংলাদেশে এই লিচু সরবরাহ হয়।

লিচু বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়ার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের বিশিষ্ট লিচু চাষী মোখলেছুর রহমান দাদা ভাই বলেন, আমার বাগানে ৩০/৩২টি লিচু গাছ আছে। এই লিচু বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছি। আমাকে দেখে অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে লিচু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি হয়েছেন।

পাকুন্দিয়ার হোসেন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হামদু বলেন, মঙ্গলবাড়িয়ায় লিচু চাষের ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কোন উদ্যোগ নেই। যদি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সঠিকভাবে চাষীদের পরামর্শ ও তদারকি করতেন এবং লিচু চাষীদের ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে এ লিচুর ফলন আরো ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধি পেত।

লিচুর উৎপত্তি: পাকুন্দিয়া মঙ্গলবাড়ীয়া লিচুর উৎপত্তিস্থল বিষয়ে সঠিক তথ্য জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে ভারতীয় কোন এলাকা থেকে প্রজাতিটি এখানে এসেছে। স্থানীয় লোকজন বলেছেন দীর্ঘদিন পূর্বে মঙ্গলবাড়ীয়া গ্রামে হাসিম মুন্সী নামে এক ব্যক্তি পাহাড়ী এলাকা থেকে একটি লিচুর চারা এনে বাড়ীর আঙ্গীনায় রোপন করেন। সেখান থেকে বাছির উদ্দিন নামে অন্য আরেক গ্রামবাসী কলম করে তার বাড়ির আঙ্গীনায় রোপন করেন। এভাবেই মঙ্গলবাড়ীয়া লিচুর প্রসার ঘটে।

সব গ্রামই মঙ্গলবাড়ীয়া: মজার ব্যাপারে হচ্ছে মঙ্গলবাড়ীয়া ছাড়াও পাকুন্দিয়া প্রায় সবকটি ইউনিয়নে রয়েছে হাজার হাজার লিচু গাছ। হোসেন্দী ইউনিয়নেই সবচেয়ে বেশি। পাকুন্দিয়া উপজেলা যেখানেই লিচু হউক না কেন এর নাম অবশ্যই মঙ্গলবাড়ীয়া লিচু।

প্রয়োজনীয় সরকারী ও বেসরকারী সহায়তা প্রদান করা হলে একদিকে যেমন এখানকার উৎপাদিত লিচুর আবাদ আরও সম্প্রসারণ করা সম্ভব সেই সাথে বিপণনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে পাল্টে যেতে পারে স্থানীয় অর্থনীতির চিত্র।

Comments

comments