সাধারণত দুই ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে (প্রবাসী-আয়) উল্লম্ফন ঘটে। এবার করোনা মহামারিতে আয় নেই অধিকাংশ প্রবাসীর। এ জন্য শঙ্কা ছিল প্রবাসী আয় নিয়ে। কিন্তু সব শঙ্কা দূর করে স্বজনদের মুখে হাসি ফোটাতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স। এতে ফুলে ফেপে উঠছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ‘গত এপ্রিল মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এ নিয়ে গত দশ মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৬৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৬০০ কোটি ডলার বেশি।… গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৮৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার। সর্বশেষ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের মোট রেমিট্যান্সের চেয়ে বেশি এসেছে এ অর্থবছরের ১০ মাসে।’
এদিকে মহামারিতে আমদানি ও রপ্তানিতে ভাটার টান চলছে। এ জন্য বৈদেশি মুদ্রার খরচও কমে গেছে। এতে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
মহামারি করোনার মধ্যেও প্রবাসী আয়ে রেকর্ড হয়েছে। প্রবাসীরা গত এপ্রিল মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ‘গত বছরের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার। এই হিসাবে গত বছরের এপ্রিলের সময়ের তুলনায় এই বছরের এপ্রিলে প্রায় ৯৭ কোটি ডলার বেশি রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।’
জানা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে সবসময়ই প্রবাসীরা কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে থাকেন। গত বছরের ন্যায় এবারও মে মাসেই ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।| গত বছরও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে লকডাউন ছিল করোনা মহামারির কারণে। এতে কর্ম হারিয়েছেন অনেকেই। তারপরও জমানো অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন তারা।
২০২০ সালের মে মাসে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। ২০১৯ সালের মে মাসে যা ছিল ১৭৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। এ হিসাবেও গত দুই বছরের তুলনায় এবার বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।… সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘অনেক প্রবাসী এখনও রেমিট্যান্স পাঠাননি। তারা মে মাসে পাঠাবেন। কারণ হচ্ছে, এবার ঈদ মে মাসের মধ্যবর্তী সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ফলে আশা করা যাচ্ছে, মে মাসেও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাবে।’
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘’রেমিট্যান্স বৃদ্ধির অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আনার প্রবণতা কমে যাওয়া, কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকারের দুই শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা ও বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের নানা উদ্যোগ।”…
Comments
comments